|

মেয়ের চাকরি চান জমিদাতা বিদ্যালয়ের সড়ক নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিতঃ ২:০৯ অপরাহ্ন | মার্চ ২০, ২০২২

মেয়ের চাকরি চান জমিদাতা বিদ্যালয়ের সড়ক নিয়ে শঙ্কা

গৌরীপুর প্রতিনিধিঃ গৌরীপুরের কান্দুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য কোনো সড়ক নেই। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাড়ির আঙিনা ও পুকুরের ভাঙা পাড় দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

এদিকে বিদ্যালয়সংলগ্ন বাসিন্দা বাবুল হোসেন নিজের মেয়েকে বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার শর্তে সড়কে জমি দিতে রাজি হয়েছেন। তবে শর্ত পূরণে অপারগতা প্রকাশ করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় সড়ক হবে, কি হবে না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাতী বালা রক্ষিত বলেন, ‘সড়ক না থাকায় স্কুলের বহুতল ভবন নির্মাণের পণ্য ফসলের জমি দিয়ে আনতে হয়েছে। সড়ক সংকটে নির্মাণসামগ্রী আনতে না পারায় স্কুলের ওয়াশব্লক প্রকল্প আলোর মুখ দেখছে না। সড়কের জন্য জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অভিভাবকদের নিয়ে বাবুল হোসেনকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মেয়েকে চাকরি না দিলে তিনি সড়ক দেবেন না।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হয়। বিদ্যালয়ে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৪৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী চারজন ব্যক্তি জমি কিনে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। পরে বিদ্যালয়ের আশপাশের বাসিন্দারা যাতায়াতের জন্য জমি ছেড়ে না দেওয়ায় বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার জন্য কোনো সড়ক হয়নি।

গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘একটি সরকারি বিদ্যালয়ে যেতে সড়ক থাকবে না, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ এ বিষয়ে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কান্দুলিয়া গ্রামের সড়কের পাশেই বাবুল হোসেনের প্রায় কয়েক কাঠা জমির পরিত্যক্ত পুকুর রয়েছে। বিদ্যালয়টির অবস্থান পুকুরের পশ্চিম পাড়ে। মূল সড়ক থেকে বিদ্যালয়ে যেতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাড়ির আঙিনা কিংবা পুকুরের পাড় ব্যবহার করতে হয়। শুকনো মৌসুমে যাতায়াতে কষ্ট না হলেও বর্ষাকালে পুকুরের পানি বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুকুরের পাশ দিয়ে সড়ক করার জন্য বাবুলের কাছে দাবি জানান। কিন্তু নিজের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া মেয়েকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি-কাম নৈশ প্রহরীর চাকরি না দিলে সড়কের জমি দেবেন না বলে জানিয়ে দেন বাবুল।

এ বিষয়ে বাবুল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সড়কের জন্য জমি দিতে আপত্তি নেই। তবে আমার মেয়েকে বিদ্যালয়ে চাকরি দিতে হবে। বিদ্যালয়ের জন্য আমরা অনেক কিছু করছি। এবার আমার মেয়েকে চাকরি দিক, এটাই দাবি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিকা পারভীন বলেন, বিদ্যালয়ের সড়কের জন্য বাবুল হোসেনকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করার চেষ্টা চালাচ্ছি। যোগ্যতার ভিত্তিতে ওনার মেয়েকে স্কুলে পার্টটাইম কিংবা আনন্দ স্কুলে চাকরির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তবে সড়কের বিনিময়ে দপ্তরি-কাম নৈশ প্রহরীর চাকরি দেওয়ার সুযোগ নেই।’

দেখা হয়েছে: 162
সর্বাধিক পঠিত
ফেইসবুকে আমরা

অত্র পত্রিকায় প্রকাশিত কোন সংবাদ কোন ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠানের মানহানিকর হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে। সকল লেখার স্বত্ব ও দায় লেখকের।

প্রকাশকঃ মোঃ উবায়দুল্লাহ
সম্পাদকঃ আরিফ আহম্মেদ
সহকারী সম্পাদকঃ সৈয়দ তরিকুল্লাহ আশরাফী
নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ সবুজ মিয়া
মোবাইলঃ ০১৯৭১-৭৬৪৪৯৭
বার্তা বিভাগ মোবাইলঃ ০১৭১৫-৭২৭২৮৮
ই-মেইলঃ [email protected]
অফিসঃ ১২/২ পশ্চিম রাজারবাগ, বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা ১২১৪