|

মাদারীপুরে ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আটক ২

প্রকাশিতঃ ৯:০৮ অপরাহ্ন | জুন ২৮, ২০১৯

মাদারীপুরে ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আটক ২

সাব্বির হোসাইন আজিজ, মাদারীপুরঃ মাদারীপুরে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ সুপারের বডিগার্ডসহ ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বডির্গাডসহ ২ কনস্টেবলকে আটকের পর নেয়া হয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে। এছাড়া একই অভিযোগে আরো দুই কর্মকর্তাকে জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করেছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে অপরাধীদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষী পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান সুমনকে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণের নগদ টাকাসহ আটক করা হয়। একই অপরাধে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সের ম্যাস ম্যানেজার পুলিশ সদস্য জাহিদ হোসেনকে বিপুল পরিমান টাকাসহ আটক করে দুজনকেই ঢাকা হেডকোয়ার্টাসে পাঠিয়ে দেয় হয়।

টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালার কাছ থেকেও ঘুষের মোটা অংকের টাকা উদ্ধার করা হয়। টিএসআই গোলাম রহমান এবং পুলিশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

তবে ঘটনাটি গত সোমবার রাতে হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আপ্রান চেষ্টা করেছিলেন জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কয়েক দফায় গত দু’দিন ধরে মাদারীপুর জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে এবিষয় কথা বলতে রাজি হয়নি কেউ। এবং অনেক কর্মকর্তার তাদের সরকারী মোবাইল ফোনে, ফোন দিলে তারা রিসিভ করেননি।

পরে বিষয়টি জানতে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সোহেল রানাকে মাদারীপুরের সাংবাদিকরা অবগত করলে তিনি আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার রাতেই মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালাদার জরুরী সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিষয়টি অবগত করেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সোহেল রানা মোবাইল ফোনে মাদারীপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের জানান, মাদারীপুরের একাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময় পুলিশে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ও টাকা গ্রহণের অভিযোগে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ হিসেবে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। আমরা সুস্থ এবং নির্ভেজাল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার পুলিশ হেডকোয়ার্টার তা করেছে। যে সকল জেলা থেকেই আমরা খবর পেয়েছি সেখানেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২৪ জুন গোপন সংবাদে জানা যায় পুলিশ লাইন্সের ম্যাস ম্যানেজার জাহিদ হোসেন মোটা অঙ্কের উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিনই ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ ও মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে পুলিশ প্রহরায় আটক করে ঢাকা হেডকোয়ার্টাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন একই অভিযোগে এসপির বডিগার্ড নূরুজ্জামান সুমনকে ৩ লাখ টাকাসহ আটক করে ঢাকা পাঠানো হয়।

এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় প্রতারণার অভিযোগে ট্রাফিক সাব-ইন্সপিক্ট্রার গোলাম রহমান ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে অন্যত্র বদলী করা হয়। আকটকৃত ও বদলিকৃতদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জব্দ করা হয়। এদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত চলছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। মাদারীপুরে এবার ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে ডিআইজিসহ পুলিশ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জড়িত ছিল।

দেখা হয়েছে: 371
সর্বাধিক পঠিত
ফেইসবুকে আমরা

অত্র পত্রিকায় প্রকাশিত কোন সংবাদ কোন ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠানের মানহানিকর হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে। সকল লেখার স্বত্ব ও দায় লেখকের।

প্রকাশকঃ মোঃ উবায়দুল্লাহ
সম্পাদকঃ আরিফ আহম্মেদ
সহকারী সম্পাদকঃ সৈয়দ তরিকুল্লাহ আশরাফী
নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ সবুজ মিয়া
মোবাইলঃ ০১৯৭১-৭৬৪৪৯৭
বার্তা বিভাগ মোবাইলঃ ০১৭১৫-৭২৭২৮৮
ই-মেইলঃ [email protected]
অফিসঃ ১২/২ পশ্চিম রাজারবাগ, বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা ১২১৪