|

শরীয়তপুরে হরে কৃষ্ট ইটভাটায় শ্রমিকরা জিম্মি দালালদের পকেট ভারী

প্রকাশিতঃ ৮:০৭ অপরাহ্ন | মার্চ ০৯, ২০১৮

মোঃ মহসিন রেজাঃ

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় মেসার্স হরে কৃষ্ট ব্রিক্স নামে একটি ইটের ভাটায় দুই শিশুসহ ২১ জন ইট শ্রমিককে জিম্মি করে রেখেছে ভাটার মালিক। বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে এই ইট শ্রমিকরা এ জিম্মি দশার অভিযোগ করেন।

তাদের কাছে জানা যায়, গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা গ্রাম থেকে ভাটার সরদারের মাধ্যমে জেলার ডামুড্যা উপজেলার শিধুলকুড়া ইউনিয়নের বড় শিধুলকুড়া গ্রামের তালতলা মেসার্স এইচ. কে. ব্রিকস্ ইট ভাটায় তারা কাজ করতে আসেন। ভাটার তিন সরদার মোতালেব, খলিল ও জাহাঙ্গীর মিলে এই শ্রমিকদের প্রতিজনকে ৪০ হাজার টাকা দাদন (অগ্রীম টাকা) দিয়ে কাজ দেবে বলে আশ্বাস দেন।

কিন্তু ডিসেম্বরের ১০ তারিখ পার হয়ে গেলেও শ্রমিকদের দাদনের টাকা না পেয়ে ভাটার সরদারকে তাগাদা করেন। এরই মধ্যে ভাটার সরদাররা মালিকদের কাছ থেকে শ্রমিকদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। আর সেই থেকে শ্রমিকরা ভাটার মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এরা কয়েকবার পালিয়ে যেতে চাইলে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। ভাটার মালিক ও ভাটার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাছে টাকা চাইলে লেবারদের মারধর করা হয় বলে জানান এসব শ্রমিকরা।

জিম্মি হওয়া এসব লেবাররা হলেন, মনি আক্তার (১৭), মো. মিজান (২২), লাকি আক্তার (৩২), ফরিদুল ইসলাম (৩৫), মৌসুম মিয়া (২৩), নুর জাহান আক্তার (১৮), ফারজানা আক্তার (১৫), লিমন (৯), মিনহাজুল ইসলাম (২১), জয়নাল আবেদীন (৪০), লিতা আক্তার (২২), মমিনুল ইসলাম মইনুল (৩৫), মহসিনা (২৫), মো. মফিজুল ইসলাম (৩২), লিপি বেগম (৩৫), মো. হাবিবুল ইসলাম (১৯), ফরিদুল হাসান (১৮), সোহেল রানা (১৫), রুমি খাতুন (১৮) ও দেড় বছরের মারিয়া ও মোহসেনা।

মনি আক্তার ও জয়নাল আবেদীনসহ অন্যান্য শ্রমিকরা জানান, পাঁচ মাস হলো শরীয়তপুরের ইট ভাটায় কাজ করতে আসছে। তাদের প্রত্যেককে ৪০ হাজার টাকা দাদন দেয়ার কথা ছিল। ভাটার সরদাররাতো দেননি, মালিকও দেননি। বরং শরীয়তপুরের এই ভাটায় জিম্মি হয়ে আছেন তারা। তারা মালিকের কাছে টাকা চাইলে, বাড়িতে যেতে চাইলে ভাটার লোকজন শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে, মারধরও করে।

শ্রমিকরা জানান, তারা রাত ৩টা থেকে একটানা বেলা ১২টা পর্যন্ত কাজ করেন। পরে দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাজ করেন। এত কাজ করার পরও তাদের পারিশ্রমিক দিচ্ছেন না ভাটার মালিক। শুধু তিন বেলা খাবার দেয়। তারা তাদের পাওনা টাকা ও মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

মেসার্স এইচ. কে. ব্রিকস’র ম্যানেজার আলম বেপারী বলেন, লেবাররা ঠিকমত কাজ করে না। তবুও তাদের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। তাদের শিকল দিয়ে বাঁধা, জিম্মি করে রাখা, মারধরের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে লেবাররা মাঝে মাঝে পালিয়ে যেতে চাইলে ধরে আনি। লোক দিয়ে পাহারা দেই।

ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজী আকতার বলেন, ঘটনাটি মাত্র শুনলাম। যদি এমন ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে অব্শ্যই ব্যবস্থা নেব।

দেখা হয়েছে: 487
সর্বাধিক পঠিত
ফেইসবুকে আমরা

অত্র পত্রিকায় প্রকাশিত কোন সংবাদ কোন ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠানের মানহানিকর হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে। সকল লেখার স্বত্ব ও দায় লেখকের।

প্রকাশকঃ মোঃ উবায়দুল্লাহ
সম্পাদকঃ আরিফ আহম্মেদ
সহকারী সম্পাদকঃ সৈয়দ তরিকুল্লাহ আশরাফী
নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ সবুজ মিয়া
মোবাইলঃ ০১৯৭১-৭৬৪৪৯৭
বার্তা বিভাগ মোবাইলঃ ০১৭১৫-৭২৭২৮৮
ই-মেইলঃ [email protected]
অফিসঃ ১২/২ পশ্চিম রাজারবাগ, বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা ১২১৪