সাব্বির হোসাইন আজিজ, মাদারীপুরঃ মাদারীপুর সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তোফায়েল হোসেনের ও নুরেআলম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে এক সহকারী শিক্ষিকা শ্লীলতাহানি ও লাঞ্চিত করার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ে করে।
এদিকে সহকারী শিক্ষা অফিসার তোফায়েল হোসেনের সাথে অসদাচরনের অভিযোগ এনে, জেলা শিক্ষা অফিসার সাময়িক বরখাস্ত করেছে নির্যাতিতা শিক্ষিকাকে। গত মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন আহমেদ এ আদেশ দেন।
মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, সহকারী শিক্ষা অফিসার তোফায়েল হোসেনের সাথে অসদাচরনের জন্য কুলপদ্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রুমা আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে
তবে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে বলা আছে, নারীকে ধর্ষনের চেষ্টা কিং বা তার পরিধয় কাপর ছেরে শীলতাহানি ঘটনায় ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হলে এব্যপারে কোন সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হলে কর্তৃপক্ষেক লিখিত অনুমতি ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবে পুলিশ।
তবে মাদারীপুরে ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অজ্ঞাত প্রভাবশালিদের কারনে তোফায়েল ও নুরেআলমকে পুলিশ গ্রেফতার করছেনা অভিযোগ ভুক্তভুগিদের। এদিকে মামলা করার কারনে প্রতিনিয়ত শিক্ষিকার চাকুরী খেয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন শিক্ষা অফিসার তোফায়েল ও নুরেআলম।
এ ব্যপারে ওই শিক্ষিকা বলেন, থানায় মামলা করেছি এক সপ্তাহের বেশি হয়েছে। পুলিশ আসামীদের ধরছেনা বরং তাদের সহযোগিতা করছে। কি কারনে ধরছে না আমি বুঝতে পারছিনা। ‘আমার গায়ে হাত দিলো, কাপর ছিরলো, শীলতাহানি করলো আমি বিচার পাইনা। জেলা শিক্ষা অীফসার অন্যায় ভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এর কোন বিধান নাই। আমি যেন ভয়ে মামলা উঠিয়ে ফেলি এজন্য এ বরখাস্ত। আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আমি এখন সঙ্কিত হয়ে পরেছি। আমি একজন নারী এ সমাজে আইনের কাছে কি আমি বিচার পাবনা?। আমি দুরুত ওদের গ্রেফতার ও বিচার চাই।’
উল্লেখ্য মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অফিসিয়াল কাজে যান ওই শিক্ষিকা। এসময় ওই শিক্ষিকার কয়েকটি ছবি তুলেন তোফায়েল। ছবি তোলার কারন জিজ্ঞেস করলে তোফায়েল ওই শিক্ষিকাকে পাশের আরেকটি নির্জন কক্ষে নিয়ে যায়। এসময় ওই ছবির সাথে অশালীন ছবি যুক্ত করে ইন্টারেনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমিকি দিয়ে কুপ্রস্তাব দেন।
পরে জোরপূর্বক ওই শিক্ষিকার পরিধেয় কাপর খোলার চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তিতে পরিধেয় বোখরা ছিড়ে যায়। শিক্ষিকা তোফায়েলের রুম থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে দরজার সামনে দারিয়ে বাধা প্রদান করেন নুরেআলম সিদ্দিকী। এই ঘটনার পরে শিক্ষিকা চিৎকার শুরু করলে তাকে ছেড়ে দেয়।
বিষয়টি মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকে জানানো হয়। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা শিক্ষিকা। তবে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারি শিক্ষা অফিসার তোফায়েল হোসেন। তিনি দাবী করেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কেন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বারেক করিম জানান, সরকারী কর্মকর্তা বিধায় প্রক্রিয়া অনুযায়ী আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। পরবর্তী বিষয় নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।